Dhaka 12:06 am, Thursday, 13 November 2025

আর যাই দেয় তাতে করে দুর্নীতি

  • Reporter Name
  • Update Time : 01:34:05 am, Thursday, 23 January 2025
  • 170 Time View

রোম্পা রাফিয়া : একবার এলাকায় মশার ঔষধ ছিটানো হলে আর দেখা নাই সারা মাসে মশা নিধকের বলে জানায় নগরবাসী। আর যাই দেয় তাতে করে দুর্নীতি। ধুয়াই সারা কাজে হয় না কিছু বলে জানায় এলাকাবাসী। কেরোসিন আর ডিজেল মিলিয়ে করে ধোকেবাজি। জানা যায়, ভুয়া বিল বানিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে সরকারি অর্থ। নভেম্বর শেষ করে ডিসেম্বরের ছুঁই ছুঁই পর্যন্ত এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু সংক্রমণ ভুগিয়েছে নারায়ণগঞ্জবাসীকে। এই জেলায় কোন মৃত্যু না হলেও এখান থেকে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীতে গিয়ে প্রাণ যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে অনেক। সিটি কর্পোরেশন এলাকা গুলোতে আক্রান্ত হার ছিল বেশি। ডেঙ্গুর সংক্রমণ একটু কমতে শুরু করলেই সদর্পে হাজির হয় কিউলেক্স মশা। এই মশার অত্যাচার এত বেড়েছে যে তা অনেকটা নিয়ন্ত্রণের বাইরে বলছে খোদ সিটি কর্পোরেশন।
আগে বছরের নির্দিষ্ট একটি সময়ে মশার উপদ্রব বেশি থাকতো, এখন তা বছরজুড়ে। দিন যায় কিন্তু মশা কমে না। নগরবাসীর অভিয়োগ ‘নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মশক নিধন কার্যক্রম কখনোই খুব শক্তিশালী ছিল না। অধিকাংশ সময় নগরবাসী ব্যর্থতাই দেখেছে। মশা নিয়ন্ত্রণে টাকা বরাদ্দ থাকলেও এর সুফল নগরবাসী পায় না। অনেক কার্যক্রম নিলেও তা কদিন না যেতেই মুখ থুবড়ে পড়ে। মশার কামড় খাওয়া এবং অসুস্থ হয়ে ভোগাই যেন নগরবাসীর নিয়তি!’
খানপুর হসপিটার রোড এলাকার অমিয় রহমান নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা অভিযোগ করে বলেন, এখন কিউলেক্স মশার উপদ্রবে নাজেহাল নগরবাসী। মশক নিধনে কোনো কাজ করছে না সিটি করপোরেশন। আগে সপ্তাহে একবার মশার ওষুধ ছিটালেও এখন এক মাসেও তাদের দেখা যায় না। ফলে দিন-রাত ২৪ ঘণ্টাই বাসা-বাড়িতে মশা কামড়ায়। সারাদিন বাসায় কয়েল জ্বালানো বা মশারি টানিয়ে রাখতে হয়। যার দিন দিন অসুস্থতা বেড়েই চলছে।
তবে এনসিসির দাবি, মশা নিধনে তারা প্রতিদিনই মশার ওষুধ ছিটান। কিন্তু যে হারে মশার উপদ্রব বাড়ছে, তা নিধনে সিটি কর্পোরেশনের একার পক্ষে সম্ভব হয়ে উঠবে না, যদি না নগরবাসী সচেতন হয়। তারপরও তারা চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।
নারায়ণগঞ্জ সিভিল সার্জনের তথ্যমতে, ২০২৪ সালে নারায়ণগঞ্জে এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন প্রায় ৩ হাজার। নারায়ণগঞ্জে এ যাবৎ কোন মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। তবে বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকায় গিয়ে মৃত্যর সংখ্যা আছে। অন্যদিকে, কিউলেক্স মশায় কামড়ালে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার অবস্থা তৈরি না হলেও এদের বাড়-বাড়ন্ত সহ্য করা কঠিন।
দেওভোগ এলাকার বাসিন্দা আফরিন আহমেদ হিয়া বলেন, চলতি মাসের শুরু থেকে নগরে কিউলেক্স মশা বাড়ছে। এভাবে আগামী মার্চ পর্যন্ত মশা বাড়বে। এতে মানুষ অসহ্য হয়ে উঠবে। তাই সিটি কর্পোরেশনগুলোর উচিত ডেঙ্গুর মতো কিউলেক্স মশা নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নেওয়া।
মশক নিধনের বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেডিকেল অফিসার নাফিয়া ইসলাম লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, আমরা ডেঙ্গু নিয়ে সোচ্চার ছিলাম। আমাদের কিছুদিন আগে সভা হয়েছে, সেখানে ডেঙ্গু নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা মূলত এই সিজনে ফগিং বন্ধ করে দেই। কিন্তু আমাদের মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে অন্যান্য মশার উপদ্রপের জন্য আমাদের ফগিং কার্যক্রম চলমান থাকবে। আমাদের যে পরিমান ওষধ আছে, আরও ২মাস আমরা চালিয়ে যেতে পারবো।
তিনি আরও বলেন, কিউলেক্স মশা উপদ্রব বেড়েছে, সিটি কর্পোরেশনের একার পক্ষে সম্ভব হয়ে উঠবে না, যদি না নগরবাসী সচেতন না হয়। প্রত্যেকে তাদের বাড়িঘর বাগার পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। আমরা নগরবাসীর সহযোগীতা কাম্য করছি। তারপরও আমরা আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আর যাই দেয় তাতে করে দুর্নীতি

Update Time : 01:34:05 am, Thursday, 23 January 2025

রোম্পা রাফিয়া : একবার এলাকায় মশার ঔষধ ছিটানো হলে আর দেখা নাই সারা মাসে মশা নিধকের বলে জানায় নগরবাসী। আর যাই দেয় তাতে করে দুর্নীতি। ধুয়াই সারা কাজে হয় না কিছু বলে জানায় এলাকাবাসী। কেরোসিন আর ডিজেল মিলিয়ে করে ধোকেবাজি। জানা যায়, ভুয়া বিল বানিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে সরকারি অর্থ। নভেম্বর শেষ করে ডিসেম্বরের ছুঁই ছুঁই পর্যন্ত এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু সংক্রমণ ভুগিয়েছে নারায়ণগঞ্জবাসীকে। এই জেলায় কোন মৃত্যু না হলেও এখান থেকে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীতে গিয়ে প্রাণ যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে অনেক। সিটি কর্পোরেশন এলাকা গুলোতে আক্রান্ত হার ছিল বেশি। ডেঙ্গুর সংক্রমণ একটু কমতে শুরু করলেই সদর্পে হাজির হয় কিউলেক্স মশা। এই মশার অত্যাচার এত বেড়েছে যে তা অনেকটা নিয়ন্ত্রণের বাইরে বলছে খোদ সিটি কর্পোরেশন।
আগে বছরের নির্দিষ্ট একটি সময়ে মশার উপদ্রব বেশি থাকতো, এখন তা বছরজুড়ে। দিন যায় কিন্তু মশা কমে না। নগরবাসীর অভিয়োগ ‘নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মশক নিধন কার্যক্রম কখনোই খুব শক্তিশালী ছিল না। অধিকাংশ সময় নগরবাসী ব্যর্থতাই দেখেছে। মশা নিয়ন্ত্রণে টাকা বরাদ্দ থাকলেও এর সুফল নগরবাসী পায় না। অনেক কার্যক্রম নিলেও তা কদিন না যেতেই মুখ থুবড়ে পড়ে। মশার কামড় খাওয়া এবং অসুস্থ হয়ে ভোগাই যেন নগরবাসীর নিয়তি!’
খানপুর হসপিটার রোড এলাকার অমিয় রহমান নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা অভিযোগ করে বলেন, এখন কিউলেক্স মশার উপদ্রবে নাজেহাল নগরবাসী। মশক নিধনে কোনো কাজ করছে না সিটি করপোরেশন। আগে সপ্তাহে একবার মশার ওষুধ ছিটালেও এখন এক মাসেও তাদের দেখা যায় না। ফলে দিন-রাত ২৪ ঘণ্টাই বাসা-বাড়িতে মশা কামড়ায়। সারাদিন বাসায় কয়েল জ্বালানো বা মশারি টানিয়ে রাখতে হয়। যার দিন দিন অসুস্থতা বেড়েই চলছে।
তবে এনসিসির দাবি, মশা নিধনে তারা প্রতিদিনই মশার ওষুধ ছিটান। কিন্তু যে হারে মশার উপদ্রব বাড়ছে, তা নিধনে সিটি কর্পোরেশনের একার পক্ষে সম্ভব হয়ে উঠবে না, যদি না নগরবাসী সচেতন হয়। তারপরও তারা চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।
নারায়ণগঞ্জ সিভিল সার্জনের তথ্যমতে, ২০২৪ সালে নারায়ণগঞ্জে এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন প্রায় ৩ হাজার। নারায়ণগঞ্জে এ যাবৎ কোন মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। তবে বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকায় গিয়ে মৃত্যর সংখ্যা আছে। অন্যদিকে, কিউলেক্স মশায় কামড়ালে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার অবস্থা তৈরি না হলেও এদের বাড়-বাড়ন্ত সহ্য করা কঠিন।
দেওভোগ এলাকার বাসিন্দা আফরিন আহমেদ হিয়া বলেন, চলতি মাসের শুরু থেকে নগরে কিউলেক্স মশা বাড়ছে। এভাবে আগামী মার্চ পর্যন্ত মশা বাড়বে। এতে মানুষ অসহ্য হয়ে উঠবে। তাই সিটি কর্পোরেশনগুলোর উচিত ডেঙ্গুর মতো কিউলেক্স মশা নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নেওয়া।
মশক নিধনের বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেডিকেল অফিসার নাফিয়া ইসলাম লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, আমরা ডেঙ্গু নিয়ে সোচ্চার ছিলাম। আমাদের কিছুদিন আগে সভা হয়েছে, সেখানে ডেঙ্গু নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা মূলত এই সিজনে ফগিং বন্ধ করে দেই। কিন্তু আমাদের মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে অন্যান্য মশার উপদ্রপের জন্য আমাদের ফগিং কার্যক্রম চলমান থাকবে। আমাদের যে পরিমান ওষধ আছে, আরও ২মাস আমরা চালিয়ে যেতে পারবো।
তিনি আরও বলেন, কিউলেক্স মশা উপদ্রব বেড়েছে, সিটি কর্পোরেশনের একার পক্ষে সম্ভব হয়ে উঠবে না, যদি না নগরবাসী সচেতন না হয়। প্রত্যেকে তাদের বাড়িঘর বাগার পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। আমরা নগরবাসীর সহযোগীতা কাম্য করছি। তারপরও আমরা আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।