Dhaka 12:14 am, Thursday, 13 November 2025

পল্টিবাজ রতন প্রতারণা করে শূন্য থেকে শতকোটি টাকার মালিক

  • Reporter Name
  • Update Time : 09:43:54 am, Sunday, 2 March 2025
  • 184 Time View

বিদ্যুৎ (সোনারগাঁও ): বসন্তের কোকিল পল্টিবাজ রতন প্রতারণা করে শূন্য থেকে শতকোটি টাকার মালিক হয়ে আংগুল ফুলে কলাগাছ।

 

প্রকৃতিতে যখন ফুলের সমাহার,গাছে গাছে যখন সবুজ পাতার ছড়াছড়ি তখনই প্রজাপতির মেলা বসে। মৌমাছি ব্যস্ত হয় মৌ সংগ্রহে। দলীয় সরকার গঠিত হলেই একই কায়দায় বিশেষ শ্রেণির বর্ণচোরা মধুমাক্ষির আবির্ভাব ঘটে দলে। তারা শীতকালে বসন্তের কোকিল হয়ে ক্ষমতার ছায়ায় থেকে সমাজকে কলুষিত করে নিজে রিষ্টপুষ্ট হন ঠিকই কিন্তু দলকে করেন ছেড়াভেরা।
তেমনি এক বসন্তের কোকিল সনমান্দি ইউনিয়নের লেদেমদি গ্রামের দিন মজুর আঃ কাদিরের মেঝো ছেলে আবুল হাসেম রতন। জামা পাল্টানোর মতই তার দল পরিবর্তন।
একের পর এক দল বদলের মাধ্যমে লবন ব্যবসার আড়ালে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করে তার কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়ার ঘটনা এখন মানুষের মুখে মুখে।
একাধিকবার দল বদলের কারনে ইতোমধ্যে সনমান্দি ইউনিয়নের পল্টিবাজ রতন হিসেবে বেশ পরিচিতি পেয়েছেন তিনি।
এক সময় হরিহরদি বাজারে লবন ও কেরোসিন তেল বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন রতন।
কিন্তু বিএনপি,জাতীয় পার্টি,আওয়ামী লীগ,যখন যে দল ক্ষমতায় সে দলেরই নেতা বনে যাওয়ার কারণে বিত্তবৈভবের মালিক হতে অসুবিধে হয়নি। বিভিন্ন সময়ে সরকার পতন হলেও,তাদের পতন হয় না। রতনরা সব সময়ই সরকারি দলের লোক হয়ে থাকতে পছন্দ করেন,থাকেনও। সব সময়ই সরকারি দলের লোক হওয়ার প্রভাবে এলাকার নিরিহ মানুষদের জমিজমা দখল ও অত্যাচার করে অবৈধ উপায়ে অর্থ উপার্জনের মাধ্যমে ধনাঢ্য ক্লাবে নামও উঠে তার।
বিএনপির আমলে অবৈধ পন্থায় সনমান্দি ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদকের পদ ভাগিয়ে নেন রতন। সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পরই নিরিহ মানুষদের জায়গা জমি জোর পূর্বক দখলে নেয়া থেকে এমন কোন কাজ নেই যা রতন করেনি।
পরবর্তীতে জাতীয় পার্টি থেকে লিয়াকত হোসেন খোকা এমপি নির্বাচিত হলে টাকার বিনিময়ে তার ছোট ভাইকে জাতীয় পার্টির সভাপতি বানিয়ে খোকার সাথে আঁতাত করে এলাকায় ভিন্নভাবে অর্থ উপার্জন করতো সে।
এরপর আওয়ামী লীগের সোনারগাঁ উপজেলার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল্ কায়সার এমপি নির্বাচিত হলে শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর সংগঠন এর উপদেষ্টা হয়ে পুরোদস্তুর আওয়ামী লীগার বনে যাওয়া রতনকে,ভিন্ন ভিন্ন প্লাটফর্মে দেখা যেতো দাপটের সহিত আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচি পালনে তার তৎপরতা।
সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে পদ পাওয়ার আশায় বিপুল সংখ্যক লোক নিয়ে সম্মেলন স্থলে শো ডাউন করে সে। তারপর থেকে আব্দুল্লাহ আল্ কায়সার এমপির নেক নজরে পড়েন। তখন থেকে তাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। কিন্তু পাঁচ আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ভোল পাল্টিয়ে আবারও বিএনপিতে ফিরে যান তিনি। বিএনপির এক নেতার সঙ্গে আঁতাত করে,বৈষম্য বিরুধি ছাত্র আন্দোলনের হত্যা মামলায় নিরীহ মানুষদের নাম জড়িয়ে এলাকা ছাড়া করেন তাদের,যাতে বিনে বাধায় তার একচ্ছত্র আধিপত্য পূর্বের মতই বজায় থাকে এলাকায়।
রতনের বড় ভাই খোকন আওয়ামী লীগ নেতা ও তার ছোট ভাই আবুল হোসেন সনমান্দি ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সভাপতি হওয়ার কারণে বিত্ত বৈভবের মালিক হতে তার কোন অসুবিধে হয়নি।
আর বেসুমার অর্থ থাকার কারণে লালবাগ/কামরাঙ্গিচর থানায় একাধিক মামলা থাকার পরও বহুল তবিয়তে দিন পার করছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে ব্যাংক জ্বালিয়াতির মামলাও রয়েছে। একদা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলছিলেন,দুঃসময় এলে আওয়ামী লীগের বসন্তের কোকিলদের পাঁচ হাজার ভোল্টেজের বাতি দিয়েও খুঁজে পাওয়া যাবে না। তার কথার জলজেন্ত উদাহরণ সনমান্দি ইউনিয়নের রতন। যুগে যুগে বসন্তের কোকিলেরা নির্লজ্জের মতো এইভাবে সুসময়ে আসিয়া সমস্ত চরাচরে তাহাদের কণ্ঠের দাপটে রাষ্ট্র করিয়া দেয়,তাহারা রহিয়াছে,তাহারাই কেবল রহিয়াছে। জগতে যেন আর কেহ নাই! থাকতেও নাই!
তাইতো বিএনপির স্থানীয় নেতা কর্মীরা রতন’র বিতর্কিত কার্য কলাপে রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করছেন এবং এই বসন্তের কোকিল যেনো আর কখনোই বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় হতে না পারেন,দলের সকল সদস্য পদ বাতিল করে তাকে বহিষ্কারের করারও দাবী জানিয়েছেন।
রতনের কাছে জানতে চাইলে,তিনি বলেন আমি ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলাম,এখন দেশের বাহিরে অবস্থান করছি। আওয়ামী লীগ করার প্রশ্নই উঠেনা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

পল্টিবাজ রতন প্রতারণা করে শূন্য থেকে শতকোটি টাকার মালিক

Update Time : 09:43:54 am, Sunday, 2 March 2025

বিদ্যুৎ (সোনারগাঁও ): বসন্তের কোকিল পল্টিবাজ রতন প্রতারণা করে শূন্য থেকে শতকোটি টাকার মালিক হয়ে আংগুল ফুলে কলাগাছ।

 

প্রকৃতিতে যখন ফুলের সমাহার,গাছে গাছে যখন সবুজ পাতার ছড়াছড়ি তখনই প্রজাপতির মেলা বসে। মৌমাছি ব্যস্ত হয় মৌ সংগ্রহে। দলীয় সরকার গঠিত হলেই একই কায়দায় বিশেষ শ্রেণির বর্ণচোরা মধুমাক্ষির আবির্ভাব ঘটে দলে। তারা শীতকালে বসন্তের কোকিল হয়ে ক্ষমতার ছায়ায় থেকে সমাজকে কলুষিত করে নিজে রিষ্টপুষ্ট হন ঠিকই কিন্তু দলকে করেন ছেড়াভেরা।
তেমনি এক বসন্তের কোকিল সনমান্দি ইউনিয়নের লেদেমদি গ্রামের দিন মজুর আঃ কাদিরের মেঝো ছেলে আবুল হাসেম রতন। জামা পাল্টানোর মতই তার দল পরিবর্তন।
একের পর এক দল বদলের মাধ্যমে লবন ব্যবসার আড়ালে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করে তার কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়ার ঘটনা এখন মানুষের মুখে মুখে।
একাধিকবার দল বদলের কারনে ইতোমধ্যে সনমান্দি ইউনিয়নের পল্টিবাজ রতন হিসেবে বেশ পরিচিতি পেয়েছেন তিনি।
এক সময় হরিহরদি বাজারে লবন ও কেরোসিন তেল বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন রতন।
কিন্তু বিএনপি,জাতীয় পার্টি,আওয়ামী লীগ,যখন যে দল ক্ষমতায় সে দলেরই নেতা বনে যাওয়ার কারণে বিত্তবৈভবের মালিক হতে অসুবিধে হয়নি। বিভিন্ন সময়ে সরকার পতন হলেও,তাদের পতন হয় না। রতনরা সব সময়ই সরকারি দলের লোক হয়ে থাকতে পছন্দ করেন,থাকেনও। সব সময়ই সরকারি দলের লোক হওয়ার প্রভাবে এলাকার নিরিহ মানুষদের জমিজমা দখল ও অত্যাচার করে অবৈধ উপায়ে অর্থ উপার্জনের মাধ্যমে ধনাঢ্য ক্লাবে নামও উঠে তার।
বিএনপির আমলে অবৈধ পন্থায় সনমান্দি ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদকের পদ ভাগিয়ে নেন রতন। সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পরই নিরিহ মানুষদের জায়গা জমি জোর পূর্বক দখলে নেয়া থেকে এমন কোন কাজ নেই যা রতন করেনি।
পরবর্তীতে জাতীয় পার্টি থেকে লিয়াকত হোসেন খোকা এমপি নির্বাচিত হলে টাকার বিনিময়ে তার ছোট ভাইকে জাতীয় পার্টির সভাপতি বানিয়ে খোকার সাথে আঁতাত করে এলাকায় ভিন্নভাবে অর্থ উপার্জন করতো সে।
এরপর আওয়ামী লীগের সোনারগাঁ উপজেলার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল্ কায়সার এমপি নির্বাচিত হলে শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর সংগঠন এর উপদেষ্টা হয়ে পুরোদস্তুর আওয়ামী লীগার বনে যাওয়া রতনকে,ভিন্ন ভিন্ন প্লাটফর্মে দেখা যেতো দাপটের সহিত আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচি পালনে তার তৎপরতা।
সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে পদ পাওয়ার আশায় বিপুল সংখ্যক লোক নিয়ে সম্মেলন স্থলে শো ডাউন করে সে। তারপর থেকে আব্দুল্লাহ আল্ কায়সার এমপির নেক নজরে পড়েন। তখন থেকে তাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। কিন্তু পাঁচ আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ভোল পাল্টিয়ে আবারও বিএনপিতে ফিরে যান তিনি। বিএনপির এক নেতার সঙ্গে আঁতাত করে,বৈষম্য বিরুধি ছাত্র আন্দোলনের হত্যা মামলায় নিরীহ মানুষদের নাম জড়িয়ে এলাকা ছাড়া করেন তাদের,যাতে বিনে বাধায় তার একচ্ছত্র আধিপত্য পূর্বের মতই বজায় থাকে এলাকায়।
রতনের বড় ভাই খোকন আওয়ামী লীগ নেতা ও তার ছোট ভাই আবুল হোসেন সনমান্দি ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সভাপতি হওয়ার কারণে বিত্ত বৈভবের মালিক হতে তার কোন অসুবিধে হয়নি।
আর বেসুমার অর্থ থাকার কারণে লালবাগ/কামরাঙ্গিচর থানায় একাধিক মামলা থাকার পরও বহুল তবিয়তে দিন পার করছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে ব্যাংক জ্বালিয়াতির মামলাও রয়েছে। একদা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলছিলেন,দুঃসময় এলে আওয়ামী লীগের বসন্তের কোকিলদের পাঁচ হাজার ভোল্টেজের বাতি দিয়েও খুঁজে পাওয়া যাবে না। তার কথার জলজেন্ত উদাহরণ সনমান্দি ইউনিয়নের রতন। যুগে যুগে বসন্তের কোকিলেরা নির্লজ্জের মতো এইভাবে সুসময়ে আসিয়া সমস্ত চরাচরে তাহাদের কণ্ঠের দাপটে রাষ্ট্র করিয়া দেয়,তাহারা রহিয়াছে,তাহারাই কেবল রহিয়াছে। জগতে যেন আর কেহ নাই! থাকতেও নাই!
তাইতো বিএনপির স্থানীয় নেতা কর্মীরা রতন’র বিতর্কিত কার্য কলাপে রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করছেন এবং এই বসন্তের কোকিল যেনো আর কখনোই বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় হতে না পারেন,দলের সকল সদস্য পদ বাতিল করে তাকে বহিষ্কারের করারও দাবী জানিয়েছেন।
রতনের কাছে জানতে চাইলে,তিনি বলেন আমি ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলাম,এখন দেশের বাহিরে অবস্থান করছি। আওয়ামী লীগ করার প্রশ্নই উঠেনা।