Dhaka 7:29 am, Friday, 7 November 2025

মুক্তিপনের ২৫ লক্ষ দিয়েও জীবিত ফেরত পায়নি মিলনকে

  • Reporter Name
  • Update Time : 05:06:05 am, Thursday, 20 March 2025
  • 92 Time View

সুলতান মাহামুদ( পাভেল) :
ঠাকুরগাঁওয়ে অনলাইনে প্রেমের ফাঁদে ফেলে মিলন হোসেন নামের এক যুবককে অপহরণ করেছিল একটি চক্র। তবে মুক্তিপণের ২৫ লাখ টাকা দিয়েও কলেজ পড়ুয়া ছেলেটিকে জীবিত পাওয়া গেল না। এ ঘটনায় পুলিশ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী মিলনের মরদেহ উদ্ধারের কাজ চলছে।

বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) রাত ৩টার দিকে দুই অপহরণকারী গ্রেফতার ও মিলনের লাশ উদ্ধারের বিষয়টি ঢাকা মেইলকে নিশ্চিত করেছেন ঠাকুরগাঁওয়ের পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- সদর উপজেলার শিবগঞ্জ মহেশপুর বিট বাজার এলাকার মো. মতিয়ার রহমানের ছেলে মো. সেজান আলী। সে এলাকার কথিত সাংবাদিক হিসেবে পরিচিত। তবে তাৎক্ষণিকভাবে আরেকজন গ্রেফতারকারীর নাম পরিচয় দেওয়া সম্ভব হয়নি পুলিশের পক্ষ থেকে।

পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম বলেন, “অনেক দিন ধরে এই বিষয়ে কাজ করছিলাম আমরা। কোনো ক্লু পাচ্ছিলাম না। প্রযুক্তির সহযোগিতায় দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়। তারা স্বীকার করেছে যে তারা মিলনকে খুন করেছে এবং তাদের দেখানো মতে লাশ উদ্ধারের কাজ চলছে।”

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গ্রেফতার হওয়া সেজান আলীর বাড়ির পাশেই একটি পরিত্যক্ত টয়লেটের নিচ থেকে মিলনের গলিত লাশ উদ্ধারের কাজ চলছে।

এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসি মামুনুর রশিদ ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘বুধবার রাতে মিলনকে অপহরণের ঘটনায় আমরা দুইজনকে গ্রেফতার করি। তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা মিলনকে হত্যা করার কথা স্বীকার করেছে এবং তাদের দেখানো মতে আমরা স্থানীয় সাক্ষীদের সামনে লাশ উদ্ধার করছি। এ বিষয়ে পরবর্তীতে বিস্তারিত জানানো হবে।’

জানা গেছে, অনলাইনে প্রেমের ফাঁদে ফেলে কলেজ পড়ুয়া মিলনকে অপহরণ করে একটি চক্র। ২৩ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৮টায় ঠাকুরগাঁও পলিটেকনিকের পিছনে প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে নিখোঁজ হয় মিলন। ঘটনার দিন রাত ১টায় অপহরণকারীরা ভুক্তভোগী পরিবারকে ফোন করে অপহরণের বিষয়টি জানায়। প্রথমে ১২ ঘণ্টার মধ্যে মুক্তিপণের ৩ লাখ টাকা চাওয়া হয়। পরদিন দুপুরে ৩ লাখ টাকা দিতে রাজি হয় মিলনের পরিবার। তবে পরে চক্রটি ৫ লাখ দাবি করে। পরদিন এটি বেড়ে ১০ লাখ হয়, এরপর তিনদিন পরে ১৫ লাখ এবং সবশেষে ২৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। রোববার (৯ মার্চ) রাতে মুক্তিপণের ২৫ লাখ টাকা অপহরণকারী চক্রের কাছে পৌঁছানো হয় মিলনের পিতা পানজাব আলীর মাধ্যমে।

২৩ বছর বয়সী শিক্ষার্থী মিলন হোসেন দিনাজপুর পলিটেকনিক কলেজের ছাত্র এবং ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার খনগাওয়ের চাপাপাড়া এলাকার পানজাব আলীর ছেলে।

এদিকে, মিলনের পরিবার জমি-জায়গা বিক্রি ও ধারদেনা করে ২৫ লাখ টাকা দিলেও ছেলেকে জীবিত না পেয়ে শোকের কাতর এবং পরিবারের সদস্যরা পাগলপ্রায় হয়ে গেছেন। ২৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়েও ফিরে পেলনা সন্তানকে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

মুক্তিপনের ২৫ লক্ষ দিয়েও জীবিত ফেরত পায়নি মিলনকে

Update Time : 05:06:05 am, Thursday, 20 March 2025

সুলতান মাহামুদ( পাভেল) :
ঠাকুরগাঁওয়ে অনলাইনে প্রেমের ফাঁদে ফেলে মিলন হোসেন নামের এক যুবককে অপহরণ করেছিল একটি চক্র। তবে মুক্তিপণের ২৫ লাখ টাকা দিয়েও কলেজ পড়ুয়া ছেলেটিকে জীবিত পাওয়া গেল না। এ ঘটনায় পুলিশ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী মিলনের মরদেহ উদ্ধারের কাজ চলছে।

বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) রাত ৩টার দিকে দুই অপহরণকারী গ্রেফতার ও মিলনের লাশ উদ্ধারের বিষয়টি ঢাকা মেইলকে নিশ্চিত করেছেন ঠাকুরগাঁওয়ের পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- সদর উপজেলার শিবগঞ্জ মহেশপুর বিট বাজার এলাকার মো. মতিয়ার রহমানের ছেলে মো. সেজান আলী। সে এলাকার কথিত সাংবাদিক হিসেবে পরিচিত। তবে তাৎক্ষণিকভাবে আরেকজন গ্রেফতারকারীর নাম পরিচয় দেওয়া সম্ভব হয়নি পুলিশের পক্ষ থেকে।

পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম বলেন, “অনেক দিন ধরে এই বিষয়ে কাজ করছিলাম আমরা। কোনো ক্লু পাচ্ছিলাম না। প্রযুক্তির সহযোগিতায় দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়। তারা স্বীকার করেছে যে তারা মিলনকে খুন করেছে এবং তাদের দেখানো মতে লাশ উদ্ধারের কাজ চলছে।”

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গ্রেফতার হওয়া সেজান আলীর বাড়ির পাশেই একটি পরিত্যক্ত টয়লেটের নিচ থেকে মিলনের গলিত লাশ উদ্ধারের কাজ চলছে।

এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসি মামুনুর রশিদ ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘বুধবার রাতে মিলনকে অপহরণের ঘটনায় আমরা দুইজনকে গ্রেফতার করি। তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা মিলনকে হত্যা করার কথা স্বীকার করেছে এবং তাদের দেখানো মতে আমরা স্থানীয় সাক্ষীদের সামনে লাশ উদ্ধার করছি। এ বিষয়ে পরবর্তীতে বিস্তারিত জানানো হবে।’

জানা গেছে, অনলাইনে প্রেমের ফাঁদে ফেলে কলেজ পড়ুয়া মিলনকে অপহরণ করে একটি চক্র। ২৩ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৮টায় ঠাকুরগাঁও পলিটেকনিকের পিছনে প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে নিখোঁজ হয় মিলন। ঘটনার দিন রাত ১টায় অপহরণকারীরা ভুক্তভোগী পরিবারকে ফোন করে অপহরণের বিষয়টি জানায়। প্রথমে ১২ ঘণ্টার মধ্যে মুক্তিপণের ৩ লাখ টাকা চাওয়া হয়। পরদিন দুপুরে ৩ লাখ টাকা দিতে রাজি হয় মিলনের পরিবার। তবে পরে চক্রটি ৫ লাখ দাবি করে। পরদিন এটি বেড়ে ১০ লাখ হয়, এরপর তিনদিন পরে ১৫ লাখ এবং সবশেষে ২৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। রোববার (৯ মার্চ) রাতে মুক্তিপণের ২৫ লাখ টাকা অপহরণকারী চক্রের কাছে পৌঁছানো হয় মিলনের পিতা পানজাব আলীর মাধ্যমে।

২৩ বছর বয়সী শিক্ষার্থী মিলন হোসেন দিনাজপুর পলিটেকনিক কলেজের ছাত্র এবং ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার খনগাওয়ের চাপাপাড়া এলাকার পানজাব আলীর ছেলে।

এদিকে, মিলনের পরিবার জমি-জায়গা বিক্রি ও ধারদেনা করে ২৫ লাখ টাকা দিলেও ছেলেকে জীবিত না পেয়ে শোকের কাতর এবং পরিবারের সদস্যরা পাগলপ্রায় হয়ে গেছেন। ২৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়েও ফিরে পেলনা সন্তানকে।