Dhaka 11:41 pm, Wednesday, 12 November 2025

লাঙ্গলবন্দে সনাতনধর্মীদের স্নানোৎসব শুরু

  • Reporter Name
  • Update Time : 08:10:53 am, Saturday, 5 April 2025
  • 129 Time View

মইন আল হোসেন -নারায়ণগঞ্জ বন্দর উপজেলার লাঙ্গলবন্দে ব্রহ্মপুত্র নদে শুক্রবার দিবাগত রাত ২টা ৮ মিনিট থেকে শুরু হয়েছে দেশ বিদেশ থেকে আসা লাখো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মহাঅষ্টমী স্নান উৎসব।পাপমোচনের এই স্নানোৎসব শেষ হবে শনিবার দিবাগত রাত ১২টা ৫১ মিনিটে।এবার দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের কথা মাথায় রেখে মহা তীর্থ লাঙ্গলবন্দ স্নান উৎসবে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থার ব্যাপারে সর্বোচ্চ গুরুত্ব আরোপ করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন।স্নান উৎসব উপলক্ষ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তায় ব্যাপক প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।লাঙ্গলবন্দের স্নান উৎসব এলাকা পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক মোঃ জাহিদুল ইসলাম মিঞা।স্নান এলাকায় ২০টি স্নান ঘাটলায় কাপড় পাল্টানো,চিকিৎসা সেবায় ভ্রাম্যমাণ কেন্দ্র,অ্যাম্বুলেন্স সেবা,শৌচাগার,বিশুদ্ধ পানি সরবারাহ ও পুণার্থীদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় দেড় হাজার সদস্য।স্নান এলাকায় টহলে থাকবে সেনাবাহিনী,র‍্যাব, ব্রহ্মপুত্র নদে টহলে থাকবে নৌ পুলিশ ও কোস্ট গার্ড।জেলা প্রশাসক মোঃজাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন-আগত পুণ্যার্থীদের সুবিধার্থে ১৬০টি শৌচাগার স্থাপন করা হয়েছে।স্নান এলাকায় বাড়তি নিরাপত্তায় জন্য বসানো হয়েছে ৭ টি ওয়াচ টাওয়ার,সিসিটিভির পাশাপাশি পর্যবেক্ষণের জন্য থাকবে ড্রোন।পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তায় লাঙ্গলবন্দ জুড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সকল ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন সহ সকল ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে স্নান উৎসব এলাকায় টহলে কর্মরত রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।লাঙ্গলবন্দ স্নান উৎসব উদযাপন কমিটির উপদেষ্টা জয় কে রায় চৌধুরী বাপ্পি জানান-শুধু নিরাপত্তা বিষয় না, দায়িত্ব পালনকালে একজন পুলিশ সদস্যের খাওয়া-দাওয়ার বিষয়টিও জেলা প্রশাসক নিজে তদারকি করছেন।বন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃমোস্তাফিজুর রহমান বলেন-অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো অনেক বেশি জোরদার করা হয়েছে।জায়গায় জায়গায় সিসি ক্যামেরা থাকবে।এবার মেজর আফসানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৫০ জন সদস্যও মোতায়েন থাকবে।এছাড়া জেলা প্রশাসক মহোদয় প্রতি ঘণ্টায় ঘণ্টায় আমার কাছে থেকে আপডেট নিয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিচ্ছেন।তিনি বলেন-নিরাপত্তার জন্য ১৪৪২ জন পুলিশ সদস্য,৪৭১ জন আনসার,নৌ-পুলিশের ৬৪ জন,কোস্ট গার্ড ও হাইওয়ে পুলিশের একটি করে টিম দায়িত্ব পালন করছেন।সরজমিনে দেখা গেছে,মন্ত্র পাঠ করে ফুল,বেলপাতা, ধান,দূর্বা, হরীতকী,ডাব, আম্রপল্লব নিয়ে পুণ্যার্থীরা স্নানে অংশ নিয়েছে।লগ্ন শুরুর পরপরই পুণ্যার্থীর ঢল নেমেছে লাঙ্গলবন্দ এলাকার প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে।পাপমোচনের বাসনায় পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র ভারত ও নেপাল সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা পুণ্যার্থীদের পদচারণনায় মুখরিত হয়ে ওঠেছে লাঙ্গলবন্দ স্নান উৎসব এলাকা।স্নান উৎসব উপলক্ষে পূর্ণস্থান এলাকায় গড়ে উঠেছে বিভিন্ন ধরনের দোকানপাট ও মেলা।মেলায় আগত দর্শনার্থীরা নিজেদের পরিবারের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সহ ছোট ছেলে মেয়েদের জন্য খেলনা কেনাকাটা করছেন।

এবার ললিত সাধুর ঘাট, অন্নপূর্ণা ঘাট, রাজ ঘাট, কালীগঞ্জ ঘাট, মা কুঁড়ি সাধুর ঘাট, মহাত্মা গান্ধী ঘাট, বড়দেশ্বরী ঘাট, জয়কালি ঘাট, রক্ষাকালী ঘাট, প্রেম তলা ঘাট, চর শ্রীরাম ঘাট, সাবদি ঘাট, বাসনকালী ও জগৎবন্ধু ঘাটে স্নান করা হচ্ছে।

নদীতে প্রতিটি ঘাটকে কেন্দ্র করে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে বিশেষ টহলসহ মাইকিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যারা সাতার না জানেন তাদেরকে পানিতে নামতে বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করা হচ্ছে। খানিক দূরে দূরে মাইকিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে যাতে কেউ হারিয়ে গেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া যায়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

লাঙ্গলবন্দে সনাতনধর্মীদের স্নানোৎসব শুরু

Update Time : 08:10:53 am, Saturday, 5 April 2025

মইন আল হোসেন -নারায়ণগঞ্জ বন্দর উপজেলার লাঙ্গলবন্দে ব্রহ্মপুত্র নদে শুক্রবার দিবাগত রাত ২টা ৮ মিনিট থেকে শুরু হয়েছে দেশ বিদেশ থেকে আসা লাখো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মহাঅষ্টমী স্নান উৎসব।পাপমোচনের এই স্নানোৎসব শেষ হবে শনিবার দিবাগত রাত ১২টা ৫১ মিনিটে।এবার দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের কথা মাথায় রেখে মহা তীর্থ লাঙ্গলবন্দ স্নান উৎসবে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থার ব্যাপারে সর্বোচ্চ গুরুত্ব আরোপ করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন।স্নান উৎসব উপলক্ষ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তায় ব্যাপক প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।লাঙ্গলবন্দের স্নান উৎসব এলাকা পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক মোঃ জাহিদুল ইসলাম মিঞা।স্নান এলাকায় ২০টি স্নান ঘাটলায় কাপড় পাল্টানো,চিকিৎসা সেবায় ভ্রাম্যমাণ কেন্দ্র,অ্যাম্বুলেন্স সেবা,শৌচাগার,বিশুদ্ধ পানি সরবারাহ ও পুণার্থীদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় দেড় হাজার সদস্য।স্নান এলাকায় টহলে থাকবে সেনাবাহিনী,র‍্যাব, ব্রহ্মপুত্র নদে টহলে থাকবে নৌ পুলিশ ও কোস্ট গার্ড।জেলা প্রশাসক মোঃজাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন-আগত পুণ্যার্থীদের সুবিধার্থে ১৬০টি শৌচাগার স্থাপন করা হয়েছে।স্নান এলাকায় বাড়তি নিরাপত্তায় জন্য বসানো হয়েছে ৭ টি ওয়াচ টাওয়ার,সিসিটিভির পাশাপাশি পর্যবেক্ষণের জন্য থাকবে ড্রোন।পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তায় লাঙ্গলবন্দ জুড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সকল ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন সহ সকল ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে স্নান উৎসব এলাকায় টহলে কর্মরত রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।লাঙ্গলবন্দ স্নান উৎসব উদযাপন কমিটির উপদেষ্টা জয় কে রায় চৌধুরী বাপ্পি জানান-শুধু নিরাপত্তা বিষয় না, দায়িত্ব পালনকালে একজন পুলিশ সদস্যের খাওয়া-দাওয়ার বিষয়টিও জেলা প্রশাসক নিজে তদারকি করছেন।বন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃমোস্তাফিজুর রহমান বলেন-অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো অনেক বেশি জোরদার করা হয়েছে।জায়গায় জায়গায় সিসি ক্যামেরা থাকবে।এবার মেজর আফসানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৫০ জন সদস্যও মোতায়েন থাকবে।এছাড়া জেলা প্রশাসক মহোদয় প্রতি ঘণ্টায় ঘণ্টায় আমার কাছে থেকে আপডেট নিয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিচ্ছেন।তিনি বলেন-নিরাপত্তার জন্য ১৪৪২ জন পুলিশ সদস্য,৪৭১ জন আনসার,নৌ-পুলিশের ৬৪ জন,কোস্ট গার্ড ও হাইওয়ে পুলিশের একটি করে টিম দায়িত্ব পালন করছেন।সরজমিনে দেখা গেছে,মন্ত্র পাঠ করে ফুল,বেলপাতা, ধান,দূর্বা, হরীতকী,ডাব, আম্রপল্লব নিয়ে পুণ্যার্থীরা স্নানে অংশ নিয়েছে।লগ্ন শুরুর পরপরই পুণ্যার্থীর ঢল নেমেছে লাঙ্গলবন্দ এলাকার প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে।পাপমোচনের বাসনায় পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র ভারত ও নেপাল সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা পুণ্যার্থীদের পদচারণনায় মুখরিত হয়ে ওঠেছে লাঙ্গলবন্দ স্নান উৎসব এলাকা।স্নান উৎসব উপলক্ষে পূর্ণস্থান এলাকায় গড়ে উঠেছে বিভিন্ন ধরনের দোকানপাট ও মেলা।মেলায় আগত দর্শনার্থীরা নিজেদের পরিবারের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সহ ছোট ছেলে মেয়েদের জন্য খেলনা কেনাকাটা করছেন।

এবার ললিত সাধুর ঘাট, অন্নপূর্ণা ঘাট, রাজ ঘাট, কালীগঞ্জ ঘাট, মা কুঁড়ি সাধুর ঘাট, মহাত্মা গান্ধী ঘাট, বড়দেশ্বরী ঘাট, জয়কালি ঘাট, রক্ষাকালী ঘাট, প্রেম তলা ঘাট, চর শ্রীরাম ঘাট, সাবদি ঘাট, বাসনকালী ও জগৎবন্ধু ঘাটে স্নান করা হচ্ছে।

নদীতে প্রতিটি ঘাটকে কেন্দ্র করে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে বিশেষ টহলসহ মাইকিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যারা সাতার না জানেন তাদেরকে পানিতে নামতে বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করা হচ্ছে। খানিক দূরে দূরে মাইকিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে যাতে কেউ হারিয়ে গেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া যায়।