Dhaka 7:25 am, Friday, 7 November 2025

৬ কিশোরীকে ধর্ষণ, পুলিশ নীরব ভুমিকায়

  • Reporter Name
  • Update Time : 01:38:14 pm, Wednesday, 30 April 2025
  • 169 Time View

 

স্টাফ রিপোর্টার-

নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁওয়ে স্কুল পড়ুয়া কিশোরী মেয়েদের টার্গেট করে ধর্ষণের পর ছবি ও ভিডিও ধারণ করে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের মাধ্যমে অন্যদের তার শিকার বানানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে নজরুল ইসলাম (৩৮) এর বিরুদ্ধে।

৩০ এপ্রিল বুধবার   সকালে উপজেলার বৈদ্যের বাজার দিঘিচানপুর এলাকার ধর্ষণ মামলার বাদি ভুক্তভোগীর মাসহ ধর্ষণের শিকার সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থী কিশোরীকে মেডিকেল পরীক্ষায় পাঠায় সোনারগাঁ থানা পুলিশ,  মামলা নিলেও গ্রেফাতার নাই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ধর্ষণের শিকার একাধিক পরিবারের সদস্যরা জানায়, নজরুলের এ অপকর্মের কথা তার পরিবারের সবার জানা। সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা পায় ছোট বোন শামীমা, মামাতো ভাই স্থানীয় বিএনপি নেতা নোবেল, সোহেল ও ভাগিনা জয়ের কাছ থেকে।

নজরুলের বোন শামীমা বলে, ‘আমার ভাইয়ের মেয়েদের নেশা আছে। যা হয়েছে তা আমার ভাইদের (স্থানীয় বিএনপি নেতা নোবেল ও সোহেল) কে নিয়ে শালিসের মাধ্যমে শেষ করা হয়ে গেছে ভবিষ্যতে সে আর এই কাজ করবে না’।

ধারাবাহিক ধর্ষণ ও ব্লাকমেইল সম্পর্কে মামলার বাদি বলে, ‘ধর্ষণ করার পর আবার ধর্ষণের রাজি করতে দীর্ঘদিন ধরে আমার মেয়েকে ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছিলো প্রতিবেশী মৃত মোহাম্মদ হোসেনের ছেলে নজরুল ইসলাম (৩৮)। আমার মেয়ে কে হত্যার ভয় দেখালে সে বিষয়টি গোপন রেখে আসছিলো। নজরুল নিজে স্থানীয় এলাকাবাসীর কাছে আমার মেয়েসহ এলাকার অন্যান্য মেয়েদের নগ্ন ছবি ও ভিডিও দেখিয়ে আমাদের পরিবারের মানসম্মানহানির চেষ্টা করে। পরে মেয়েকে চাপ দিলে ধর্ষণের ঘটনা আমরা জানতে পারি’।

আরেকজন ভুক্তভোগী কিশোরী মা বলে, ‘আমার মেয়েকে ধর্ষণের করলে নজরুলের বিরুদ্ধে সোনারগাঁ থানায় অভিযোগ দেয়ার পর স্থানীয় বিএনপির নেতা নোবেল ও সোহেল বিচার শালিশ করে সমাধান করে।মেয়েকে বিয়ে দেয়ার পর সে নগ্ন ছবি ও ভিডিও দেখিয়ে আমার মেয়ের সংসার ভেঙে দিতে পায়তারা করছে’।

ভুক্তভোগী কিশোরী বলে, ‘আমাকে আমার প্রতিবেশী খালার মাধ্যমে নজরুল ইসলাম তার বোনের বাড়িতে নিয়ে যা। বাড়ি ফাঁকা থাকায় আমি বের হয়ে আসতে চাইলে আমার মুখ ও হাতপা বেঁধে ধর্ষণ করে। তারপর আমার নগ্ন ছবি ও ধারণ করে এই ঘটনা কাউকে বললে আমার মাসহ আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিলে আমি ভয়ে কাউকে জানাই নাই। পরে নজরুল আমার স্কুলে (বৈদ্যেরবাজার পাইলট স্কুল) গিয়ে এই ছবি ও ভিডিও দেখিয়ে তার সাথে যেতে বললে আমি রাজি না হলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবি ও ভিডিও ভাইরাল করার ভয় দেখালে আমি যেতে বাধ্য হই। সর্বশেষ এই মাসের ৩ (এপ্রিল) তারিখ লুচ্চা  আমাকে গ্রামের পাশের চকে নিয়ে পেয়ারা বাগানে খারাপ কাজ করে’।

ভুক্তভোগী আরো জানায়, যে প্রতিবেশি খালা আমাকে ডেকে নেয় নজরুল তাকেও ধর্ষণ করেছিল। এই এলাকায় আরো ৬ জন মেয়েকে ধর্ষণ করার প্রমাণ আছে।

ধর্ষণের বিচার স্থানীয় বিএনপি নেতারা করতে পারে কিনা প্রশ্নের উত্তরে সোনারগাঁ থানার অফিসার ইনচার্জ মো: মফিজুর রহমান বলে,’কোন ভাবেই ধর্ষণের বিচার স্থানীয় শালিসে করার সুযোগ নেই। আমরা গত ১২ এপ্রিল অভিযোগ পাওয়ার পর নগ্ন ছবি ও ভিডিও ধারণ করা ডিভাইসটি উদ্ধারে অভিযান চালিয়েছি।এই ঘটনায় মামলা নেয়া হয়েছে। আসামী নজরুলকে ধরতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে।

ভুক্তভোগী জানায় অবৈধ্য সুবিধা পেয়ে পুলিশ আসামী গ্রেফতার করছে না। বিএনপি নেতারা তাদের পুলিশ দিয়ে সহায়তা করছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

৬ কিশোরীকে ধর্ষণ, পুলিশ নীরব ভুমিকায়

Update Time : 01:38:14 pm, Wednesday, 30 April 2025

 

স্টাফ রিপোর্টার-

নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁওয়ে স্কুল পড়ুয়া কিশোরী মেয়েদের টার্গেট করে ধর্ষণের পর ছবি ও ভিডিও ধারণ করে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের মাধ্যমে অন্যদের তার শিকার বানানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে নজরুল ইসলাম (৩৮) এর বিরুদ্ধে।

৩০ এপ্রিল বুধবার   সকালে উপজেলার বৈদ্যের বাজার দিঘিচানপুর এলাকার ধর্ষণ মামলার বাদি ভুক্তভোগীর মাসহ ধর্ষণের শিকার সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থী কিশোরীকে মেডিকেল পরীক্ষায় পাঠায় সোনারগাঁ থানা পুলিশ,  মামলা নিলেও গ্রেফাতার নাই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ধর্ষণের শিকার একাধিক পরিবারের সদস্যরা জানায়, নজরুলের এ অপকর্মের কথা তার পরিবারের সবার জানা। সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা পায় ছোট বোন শামীমা, মামাতো ভাই স্থানীয় বিএনপি নেতা নোবেল, সোহেল ও ভাগিনা জয়ের কাছ থেকে।

নজরুলের বোন শামীমা বলে, ‘আমার ভাইয়ের মেয়েদের নেশা আছে। যা হয়েছে তা আমার ভাইদের (স্থানীয় বিএনপি নেতা নোবেল ও সোহেল) কে নিয়ে শালিসের মাধ্যমে শেষ করা হয়ে গেছে ভবিষ্যতে সে আর এই কাজ করবে না’।

ধারাবাহিক ধর্ষণ ও ব্লাকমেইল সম্পর্কে মামলার বাদি বলে, ‘ধর্ষণ করার পর আবার ধর্ষণের রাজি করতে দীর্ঘদিন ধরে আমার মেয়েকে ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছিলো প্রতিবেশী মৃত মোহাম্মদ হোসেনের ছেলে নজরুল ইসলাম (৩৮)। আমার মেয়ে কে হত্যার ভয় দেখালে সে বিষয়টি গোপন রেখে আসছিলো। নজরুল নিজে স্থানীয় এলাকাবাসীর কাছে আমার মেয়েসহ এলাকার অন্যান্য মেয়েদের নগ্ন ছবি ও ভিডিও দেখিয়ে আমাদের পরিবারের মানসম্মানহানির চেষ্টা করে। পরে মেয়েকে চাপ দিলে ধর্ষণের ঘটনা আমরা জানতে পারি’।

আরেকজন ভুক্তভোগী কিশোরী মা বলে, ‘আমার মেয়েকে ধর্ষণের করলে নজরুলের বিরুদ্ধে সোনারগাঁ থানায় অভিযোগ দেয়ার পর স্থানীয় বিএনপির নেতা নোবেল ও সোহেল বিচার শালিশ করে সমাধান করে।মেয়েকে বিয়ে দেয়ার পর সে নগ্ন ছবি ও ভিডিও দেখিয়ে আমার মেয়ের সংসার ভেঙে দিতে পায়তারা করছে’।

ভুক্তভোগী কিশোরী বলে, ‘আমাকে আমার প্রতিবেশী খালার মাধ্যমে নজরুল ইসলাম তার বোনের বাড়িতে নিয়ে যা। বাড়ি ফাঁকা থাকায় আমি বের হয়ে আসতে চাইলে আমার মুখ ও হাতপা বেঁধে ধর্ষণ করে। তারপর আমার নগ্ন ছবি ও ধারণ করে এই ঘটনা কাউকে বললে আমার মাসহ আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিলে আমি ভয়ে কাউকে জানাই নাই। পরে নজরুল আমার স্কুলে (বৈদ্যেরবাজার পাইলট স্কুল) গিয়ে এই ছবি ও ভিডিও দেখিয়ে তার সাথে যেতে বললে আমি রাজি না হলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবি ও ভিডিও ভাইরাল করার ভয় দেখালে আমি যেতে বাধ্য হই। সর্বশেষ এই মাসের ৩ (এপ্রিল) তারিখ লুচ্চা  আমাকে গ্রামের পাশের চকে নিয়ে পেয়ারা বাগানে খারাপ কাজ করে’।

ভুক্তভোগী আরো জানায়, যে প্রতিবেশি খালা আমাকে ডেকে নেয় নজরুল তাকেও ধর্ষণ করেছিল। এই এলাকায় আরো ৬ জন মেয়েকে ধর্ষণ করার প্রমাণ আছে।

ধর্ষণের বিচার স্থানীয় বিএনপি নেতারা করতে পারে কিনা প্রশ্নের উত্তরে সোনারগাঁ থানার অফিসার ইনচার্জ মো: মফিজুর রহমান বলে,’কোন ভাবেই ধর্ষণের বিচার স্থানীয় শালিসে করার সুযোগ নেই। আমরা গত ১২ এপ্রিল অভিযোগ পাওয়ার পর নগ্ন ছবি ও ভিডিও ধারণ করা ডিভাইসটি উদ্ধারে অভিযান চালিয়েছি।এই ঘটনায় মামলা নেয়া হয়েছে। আসামী নজরুলকে ধরতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে।

ভুক্তভোগী জানায় অবৈধ্য সুবিধা পেয়ে পুলিশ আসামী গ্রেফতার করছে না। বিএনপি নেতারা তাদের পুলিশ দিয়ে সহায়তা করছে।