Dhaka 7:04 am, Friday, 7 November 2025

ইনজীবী সাখাওয়াত এবং তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ থানায়

  • Reporter Name
  • Update Time : 01:34:08 pm, Sunday, 26 October 2025
  • 29 Time View
  • আল আমিন নীরব: নারায়ণগঞ্জ জেলা আদালত প্রাঙ্গণে একটি মামলার হাজিরার তারিখে বাদী ও তার পরিবারের সদস্যদের উপর হামলা ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সাখাওয়াত হোসেন খান এবং তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে।

রোববার (২৬ অক্টোবর) বেলা ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে বলে জানান ফতুল্লা মডেল থানার ওসি তদন্ত আনোয়ার হোসেন।

তিনি বলেন, এই ঘটনায় আহত পরিবারের একজন সদস্য থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্তাধীন আছে। তদন্তের পর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আহতরা হলেন: স্যানেটারি পণ্যের ব্যবসায়ী ইরফান মিয়া (৫০), তার স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা এবং তাদের ছেলে বক্সিং প্লেয়ার জিদান (১৮) ও আব্দুল্লাহ (৫)।

তাদের মধ্যে ইরফান মিয়া গুরুতর আহত হয়ে নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

রাজিয়া সুলতানা লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করে, তার স্বামী ইরফান মিয়া অপর এক ব্যবসায়ী ইসমাইলের কাছে স্যানেটারি পণ্য বিক্রির ২৫ লাখ টাকা পাওনা। গত এক বছর যাবৎ তিনি এই বকেয়া পরিশোধ করছে না, উল্টো তাদের হুমকি দেয়। এই ঘটনায় কয়েকমাস আগে নারায়ণগঞ্জের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলাও করে।

মামলাটি আসামিপক্ষে বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান লড়ছে বলে জানায় ভুক্তভোগী পরিবার।

ঐ মামলায় রোববার আদালতে হাজিরা থাকায় বাদী ও তার পরিবারের সদস্যরাও সেখানে যায়। আদালত প্রাঙ্গণে বাদীপক্ষের লোকজনকে দেখতে পেয়ে সাখাওয়াত হোসেনের নির্দেশে তার অনুসারী আইনজীবী ও সহকারী মিলে হামলা চালায় বলে লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেছে রাজিয়া।

এই ঘটনায় সাখাওয়াত হোসেন (৫০) ছাড়াও তার ল’ফার্মের জুনিয়র আইনজীবী খোরশেদ আলম, আল-আমিন এবং সহকারী (মুহুরি) হিরণ বাদশাকেও অভিযুক্ত করা হয়েছে।

এদিকে, মারধরের ঘটনার একটি ভিডিও মুহুর্তেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ঐ ভিডিওতে ইরফান ও তার পরিবারের সদস্যদের মারধর করা কয়েকজন ব্যক্তির মধ্যে সাখাওয়াত হোসেনের ঘনিষ্ঠ অনুসারী খোরশেদ আলম, আল-আমিন এবং মুহুরি হিরণ বাদশাকেও দেখা যায়।

ইরফানের ছেলে জিদান বলে, “আমার বাবাকে দেখতে পেয়েই হুমকি-ধমকি দিতে শুরু করে সাখাওয়াত হোসেন। পরে সে তার জুনিয়রদের নির্দেশ দিলে তারা আমার বাবাকে মারধর করতে শুরু করে। আমি ঠেকাতে গেলে আমাকেও আঘাত করে। আমি একজন জাতীয় পর্যায়ের বক্সিং প্লেয়ার, আমি আমার মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়েছি। আমি আমার ক্যারিয়ার নিয়েও শঙ্কিত।”

মারধরের এক পর্যায়ে আদালতপাড়ায় দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা তাদের নিরাপত্তা হেফাজতে নেয় বলেও জানায় জিদান।

এ ব্যাপারে কথা বলতে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খানের দু’টি মুঠোফোনের নম্বরে কল করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

তবে, অপর অভিযুক্ত অ্যাডভোকেট আল-আমিন পাল্টা অভিযোগ তুলে বলে, “কয়েকজন ব্যক্তি মুহুরি হিরণ ভাইকে মারধর করতেছিল। এইটা দেইখা আমি একবার তাদের থামাইছিও। পরে তারা আমার উপরও চড়াও হয়। তখন একটা ধস্তাধস্তি হয়।”

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

ইনজীবী সাখাওয়াত এবং তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ থানায়

Update Time : 01:34:08 pm, Sunday, 26 October 2025
  • আল আমিন নীরব: নারায়ণগঞ্জ জেলা আদালত প্রাঙ্গণে একটি মামলার হাজিরার তারিখে বাদী ও তার পরিবারের সদস্যদের উপর হামলা ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সাখাওয়াত হোসেন খান এবং তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে।

রোববার (২৬ অক্টোবর) বেলা ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে বলে জানান ফতুল্লা মডেল থানার ওসি তদন্ত আনোয়ার হোসেন।

তিনি বলেন, এই ঘটনায় আহত পরিবারের একজন সদস্য থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্তাধীন আছে। তদন্তের পর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আহতরা হলেন: স্যানেটারি পণ্যের ব্যবসায়ী ইরফান মিয়া (৫০), তার স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা এবং তাদের ছেলে বক্সিং প্লেয়ার জিদান (১৮) ও আব্দুল্লাহ (৫)।

তাদের মধ্যে ইরফান মিয়া গুরুতর আহত হয়ে নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

রাজিয়া সুলতানা লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করে, তার স্বামী ইরফান মিয়া অপর এক ব্যবসায়ী ইসমাইলের কাছে স্যানেটারি পণ্য বিক্রির ২৫ লাখ টাকা পাওনা। গত এক বছর যাবৎ তিনি এই বকেয়া পরিশোধ করছে না, উল্টো তাদের হুমকি দেয়। এই ঘটনায় কয়েকমাস আগে নারায়ণগঞ্জের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলাও করে।

মামলাটি আসামিপক্ষে বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান লড়ছে বলে জানায় ভুক্তভোগী পরিবার।

ঐ মামলায় রোববার আদালতে হাজিরা থাকায় বাদী ও তার পরিবারের সদস্যরাও সেখানে যায়। আদালত প্রাঙ্গণে বাদীপক্ষের লোকজনকে দেখতে পেয়ে সাখাওয়াত হোসেনের নির্দেশে তার অনুসারী আইনজীবী ও সহকারী মিলে হামলা চালায় বলে লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেছে রাজিয়া।

এই ঘটনায় সাখাওয়াত হোসেন (৫০) ছাড়াও তার ল’ফার্মের জুনিয়র আইনজীবী খোরশেদ আলম, আল-আমিন এবং সহকারী (মুহুরি) হিরণ বাদশাকেও অভিযুক্ত করা হয়েছে।

এদিকে, মারধরের ঘটনার একটি ভিডিও মুহুর্তেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ঐ ভিডিওতে ইরফান ও তার পরিবারের সদস্যদের মারধর করা কয়েকজন ব্যক্তির মধ্যে সাখাওয়াত হোসেনের ঘনিষ্ঠ অনুসারী খোরশেদ আলম, আল-আমিন এবং মুহুরি হিরণ বাদশাকেও দেখা যায়।

ইরফানের ছেলে জিদান বলে, “আমার বাবাকে দেখতে পেয়েই হুমকি-ধমকি দিতে শুরু করে সাখাওয়াত হোসেন। পরে সে তার জুনিয়রদের নির্দেশ দিলে তারা আমার বাবাকে মারধর করতে শুরু করে। আমি ঠেকাতে গেলে আমাকেও আঘাত করে। আমি একজন জাতীয় পর্যায়ের বক্সিং প্লেয়ার, আমি আমার মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়েছি। আমি আমার ক্যারিয়ার নিয়েও শঙ্কিত।”

মারধরের এক পর্যায়ে আদালতপাড়ায় দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা তাদের নিরাপত্তা হেফাজতে নেয় বলেও জানায় জিদান।

এ ব্যাপারে কথা বলতে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খানের দু’টি মুঠোফোনের নম্বরে কল করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

তবে, অপর অভিযুক্ত অ্যাডভোকেট আল-আমিন পাল্টা অভিযোগ তুলে বলে, “কয়েকজন ব্যক্তি মুহুরি হিরণ ভাইকে মারধর করতেছিল। এইটা দেইখা আমি একবার তাদের থামাইছিও। পরে তারা আমার উপরও চড়াও হয়। তখন একটা ধস্তাধস্তি হয়।”